বঙ্গবন্ধু সরকারের অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের সফরের মাধ্যমে ১৯৭৪ সালে সর্বপ্রথম বাংলাদেশ-সৌদি সম্পর্কের দ্বার উন্মোচিত হয়। সেসময় বাংলাদেশের বন্যাদুর্গতদের সহায়তায় সৌদি সরকার ১ কোটি ডলার সহায়তা প্রদান করে। পরবর্তীতে সম্পর্কোন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদান করে সৌদি সরকার। একই বছর তারা সর্বপ্রথম ২১৭ জন শ্রমিক নেয় এবং ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে সর্বাধিক শ্রমিক আমদানি করে।
.
বাংলাদেশ-সৌদি সম্পর্কে অপার সম্ভাবনা
.
প্রাচীনকাল থেকেই এ দুই অঞ্চলের মাঝে শক্তিশালী সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিদ্যমান। এ অঞ্চলে ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় সুফি সাধকদের পাশাপাশি আরবীয় বণিকদের অবদান স্মরণীয় হয়ে আছে। তাদের অন্যতম বাণিজ্যিক রুট ছিল বঙ্গোপসাগর। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাণিজ্যে যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম বন্দরে যাত্রাবিরতি ঘটতো এদের। বিভিন্ন কারণে অত্র অঞ্চলে অবস্থানকালে আরবীয় বণিকদের এখানকার মায়ায় পড়ে স্থায়ীভাবে থেকে যাওয়ার কথাও ইতিহাসে পাওয়া যায়। এসব কারণে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিতে আরবীয় সংমিশ্রণ পরিলক্ষিত হয়।
.
.
দ্বিপাক্ষিক সম্পৃতির গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য বহন করে বাংলার স্বাধীন সুলতানি আমল। তৎকালীন সুলতান গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের অর্থায়নে মক্কা-মদিনায় গড়ে উঠেছিল বহু স্থাপনা। এসবের মধ্যে অন্যতম হলো, মাদরাসা, সরাইখানা, আরাফাতের ময়দানের খাল। এছাড়া তৎকালীন সময়ে নিয়মিত অর্থ সাহায্য প্রদানের কথাও ইতিহাসে পাওয়া যায়। পাঁচ হাজার কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত হলেও পবিত্র হজ পালন ও বাণিজ্যিক লেনদেনের ফলে আদিকাল থেকেই দুই অঞ্চলের সম্পর্ক সুদৃঢ়। কালের পরিক্রমায় বাংলাদেশ আজ বিশ্বের চতুর্থ জনবহুল মুসলিম দেশ।