.
রুশ-ইউক্রেন সংকটের ফাঁদে নর্ড স্ট্রিম-২
.
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এই গ্যাস বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট হলো ইউক্রেন। ২০০০ সালের দিকে গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ নিয়ে রুশ-ইউক্রেন বিবাদ সৃষ্টি হয়। এতে রাশিয়া স্বকীয়তা বজায় রাখতে বাল্টিক সাগরের তলদেশ দিয়ে নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইন স্থাপনের পরিকল্পনা করে, যার গন্তব্যস্থল ছিল জার্মানি। রুশ গ্যাস রপ্তানি রুটের ৮০ ভাগ ট্রানজিটের অধিকারী ইউক্রেন স্বভাবতই এর বিরোধিতা করে। কিন্তু তৎকালীন জার্মান শাসক গেরহার্ড শ্রোয়েডারের সাথে সখ্যতার ফলে পুতিন ২০০৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পাইপলাইন প্রকল্পের চুক্তি সম্পাদন করতে সক্ষম হন। ৬ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পটি ২০১১ সালে শেষ হলে রাশিয়ার ইউক্রেন নির্ভরতা কমে আসে।রুশ-ইউক্রেন সংকটে নর্ড স্ট্রিম পাইপ্লাইন প্রকল্প |
.
পাইপলাইন-১ এর কার্যকরিতা এবং ইউক্রেনে ইউরোমাইদান বিপ্লবের মাধ্যমে মার্কিনপন্থি সরকারের ক্ষমতা গ্রহণ করে। এর প্রেক্ষিতে রাশিয়া নর্ড স্ট্রিম-২ প্রকল্পের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ২০১৪ সালে। পশ্চিমা, মার্কিন ও ইউরোপের ত্রিমুখী চাপ সত্ত্বেও ২০১৮ সালে পাইপলাইনের কাজ শুরু হয়। শেষ হয় গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর। খরচ ১১ বিলিয়ন ডলার। তবে মূল কাজ শেষ হলেও জার্মান জ্বালানি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিনেৎজা'র আরোপিত শর্তাবলী পূরণের কাজ চলছে। সব ঠিক থাকলে এই বছরের মাঝামাঝি পাইপলাইন চালুর কথা ছিল। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতি সেই সম্ভাবনাকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে।
.
.
গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার যুদ্ধাংদেহী মনোভাবের প্রেক্ষিতে জার্মানি প্রকল্প হতে সরে আসে। এটি অবশ্যই বেতিক্রমী একটি পদক্ষেপ। কেননা এতদিন পর্যন্ত সাবেক চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মার্কেল ও বর্তমান ওলাফ শলৎস প্রকল্পটিকে 'ব্যবসায়িক' অজুহাতে রক্ষা করেছেন। পাইপলাইন বিরোধী জার্মানির কোয়ালিশন সরকারের একটি অংশ গ্রিন পার্টি। তাদের দাবির মুখে শলৎস বলেছিলেন, "এটি বেসরকারি প্রকল্প, এবিষয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোই সিদ্ধান্ত নিবে"। এর আগে ২০২০ সালে রাশিয়ার পুতিন বিরোধী জনপ্রিয় নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনিকে বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটে। এর জেরে পাইপলাইন প্রকল্প বন্ধ করতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপ আসে এঙ্গেলা মার্কেলের উপর। তখন তিনিও বলেছিলেন, "গ্যাস সংযোগের সাথে ব্যক্তিগত বিষয়ের সম্পর্ক নেই"।
.
.
.
বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোর আশঙ্কা, প্রকল্পটির কারণে তারা অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি ভৌগলিক হুমকির মুখেও পড়বে। কেননা গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রূশ নেভি অত্র অঞ্চলে টহল শুরু করতে পারে, যা একটি সার্বক্ষণিক হুমকি। এছাড়া গ্যাস রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ইউরোপে পুতিনের আধিপত্য বাড়বে। পাইপলাইন ব্যবহৃত হতে পারে কূটনৈতিক অস্ত্র হিসেবে। রুশ বলয়ে প্রবেশ করতে পারে অনেক দেশ।
.
.
.
পাইপলাইন-১ এর কার্যকরিতা এবং ইউক্রেনে ইউরোমাইদান বিপ্লবের মাধ্যমে মার্কিনপন্থি সরকারের ক্ষমতা গ্রহণ করে। এর প্রেক্ষিতে রাশিয়া নর্ড স্ট্রিম-২ প্রকল্পের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ২০১৪ সালে। পশ্চিমা, মার্কিন ও ইউরোপের ত্রিমুখী চাপ সত্ত্বেও ২০১৮ সালে পাইপলাইনের কাজ শুরু হয়। শেষ হয় গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর। খরচ ১১ বিলিয়ন ডলার। তবে মূল কাজ শেষ হলেও জার্মান জ্বালানি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিনেৎজা'র আরোপিত শর্তাবলী পূরণের কাজ চলছে। সব ঠিক থাকলে এই বছরের মাঝামাঝি পাইপলাইন চালুর কথা ছিল। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতি সেই সম্ভাবনাকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে।
.
.
গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার যুদ্ধাংদেহী মনোভাবের প্রেক্ষিতে জার্মানি প্রকল্প হতে সরে আসে। এটি অবশ্যই বেতিক্রমী একটি পদক্ষেপ। কেননা এতদিন পর্যন্ত সাবেক চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মার্কেল ও বর্তমান ওলাফ শলৎস প্রকল্পটিকে 'ব্যবসায়িক' অজুহাতে রক্ষা করেছেন। পাইপলাইন বিরোধী জার্মানির কোয়ালিশন সরকারের একটি অংশ গ্রিন পার্টি। তাদের দাবির মুখে শলৎস বলেছিলেন, "এটি বেসরকারি প্রকল্প, এবিষয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোই সিদ্ধান্ত নিবে"। এর আগে ২০২০ সালে রাশিয়ার পুতিন বিরোধী জনপ্রিয় নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনিকে বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটে। এর জেরে পাইপলাইন প্রকল্প বন্ধ করতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপ আসে এঙ্গেলা মার্কেলের উপর। তখন তিনিও বলেছিলেন, "গ্যাস সংযোগের সাথে ব্যক্তিগত বিষয়ের সম্পর্ক নেই"।
নর্ড স্ট্রিম-২ প্রকল্প ম্যাপ |
.
ভূরাজনৈতিক অস্ত্র
রাশিয়া ইউক্রেন সংক্রান্ত উত্তেজনা সৃষ্টির কিছুদিনের মধ্যেই ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ সীমিত করে। এতে স্বাভাবিকভাবেই গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পায়। বাজারে সৃষ্টি হয় অস্থিরতা। নতুনভাবে পাইপলাইন-২ চালু হলে ৫৫ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস রপ্তানি বাড়বে। এতে ইউরোপ আরও বেশি রুশ নির্ভর হয়ে পড়বে। ইউক্রেন নির্ভরতা কমে আসবে শুন্যের কোটায়। পাইপলাইন-২ এর স্বত্ত্বাধীকারী রুশ সংস্থা গ্যাজপ্রমের মতে, এতে অতিরিক্ত আয় হবে ১৫ বিলিয়ন ডলার।.
.
বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোর আশঙ্কা, প্রকল্পটির কারণে তারা অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি ভৌগলিক হুমকির মুখেও পড়বে। কেননা গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রূশ নেভি অত্র অঞ্চলে টহল শুরু করতে পারে, যা একটি সার্বক্ষণিক হুমকি। এছাড়া গ্যাস রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ইউরোপে পুতিনের আধিপত্য বাড়বে। পাইপলাইন ব্যবহৃত হতে পারে কূটনৈতিক অস্ত্র হিসেবে। রুশ বলয়ে প্রবেশ করতে পারে অনেক দেশ।
স্থগিত নর্ড স্ট্রিম-২ এর কজ |
ইউরোপ-জার্মানির স্বার্থ
কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং কয়লা নির্ভরতা দূরিকরণে বর্তমান জার্মান সরকার ২০৩০ সালের একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এছাড়াও তারা সচেষ্ট আছে শেষ তিনটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধে। এসব লক্ষ্য পূরণে প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ গ্যাস। ইতোমধ্যেই জার্মানি তাদের গ্যাস চাহিদার ৬০ শতাংশই পূরণ করে রাশিয়া থেকে। ভৌগলিক ও জলবায়ুর কারণে পূর্ব ও মধ্য ইউরোপে জ্বালানি উৎপাদন এবং ঘরবাড়ির শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমানে এসবকিছুর ব্যবস্থাপনা রুশ গ্যাস নির্ভর। তাছাড়া নর্ড স্ট্রিম-২ চালু হলে নতুন করে ইউরোপের ২ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষ গ্যাস সংযোগ পাবে। অনেক ক্ষেত্রে নিশ্চিত হবে গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ।.
.
প্রকল্প বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা
নর্ড স্ট্রিম-২ পাইপলাইনের কাজে শুরু থেকেই বাঁধা সৃষ্টি করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এর প্রধান কারণ পশ্চিমা মিত্র হারানোর আশঙ্কা এবং ইউরোপে রুশ প্রভাব বৃদ্ধি। এছাড়াও আছে বৃহৎ বাণিজ্যিক লোকসানের ঝুঁকি। বর্তমানে নির্দিষ্ট কিছু দেশে যুক্তরাষ্ট্র গ্যাস রপ্তানি করে থাকে। তবে রুশ গ্যাসের তুলনায় মার্কিন এলএনজি'র দাম অনেক বেশি। ফলে সুবিধা পেলে মার্কিন ক্রেতারা দিক পরিবর্তন করতেই পারে। প্রত্যেক দেশই নিজ দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়। জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই হয় সব দেশের অন্যতম কূটনৈতিক মিশন। তাই যেকোনো মুল্যে নর্ড স্ট্রিম-২ ব্যর্থ করতে বাইডেন সরকার মরিয়া।
.
প্রকল্প বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি |
.
সম্প্রতি রাশিয়ার ইউক্রেন হামলার জেরে পাইপলাইন-২ এ যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাশিয়া। তারা ১০০০ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে ইতোমধ্যেই। এতে অনেক ইউরোপীয় কোম্পানিরও বিনিয়োগ রয়েছে। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় বাজেটের ৪০ শতাংশের যোগান হয় গ্যাস রপ্তানি হতে। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, রাশিয়া নিজস্ব পরিকল্পনার বিপরীতে পাইপলাইনকে প্রাধান্য দিচ্ছে না। এর অন্যতম কারণ হতে পারে চীনে গ্যাস রপ্তানি বৃদ্ধি।
.
.
পৃথিবীর সর্বাধিক গ্যাস উত্তোলনকারী দেশ রাশিয়া। তাদের তৃতীয় বৃহৎ ক্রেতা চীন। সাইবেরিয়ার পাইপলাইনের মাধ্যমে চলে এই রপ্তানি কার্যক্রম। সম্প্রতি অলিম্পিক গেমস উপলক্ষে চীন সফর করেন পুতিন। এসময় দুই দেশের মধ্যে ১১৭.৫ বিলিয়ন ডলারের ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তি সম্পাদিত হয়। এতে গ্যাস রপ্তানি বাৎসরিক ১০ বিলিয়ন ঘনমিটারে উন্নিত করার কথা বলা হয়। উদ্দেশ্যে ২০২৫ সালে ৩৮ বিলিয়ন ঘনমিটার রপ্তানি নিশ্চিতকরণ। একইসাথে ৮০ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ১০ বছরে ১০০ মিলিয়ন টন তেল রপ্তানির চুক্তিও হয়। (আল-জাজিরা)
.
সার্বিক বিবেচনায় বলা যায়, নর্ড স্ট্রিম-২ এর আশা রাশিয়া কিছুদিনের জন্যে ভুলে যাবে। পশ্চিমা অবরোধের বিপরীতে ইউরোপে তারা গ্যাস রপ্তানি বন্ধ করে দিলে এক বৈশ্বিক সংকটের সৃষ্টি হবে। এর ভয়াবহতা কিছুটা ইতোমধ্যেই পরিলক্ষিত হচ্ছে। তেল-গ্যাসের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বিশ্ব বাজারে। কয়েকদিনেই বিগত সাত বছরের রেকর্ড ভেঙ্গেছে। এ নিয়ে ইউরোপীয় নেতারা উদ্বিগ্ন। খনিজ সম্পদ নিয়ে এই টানাপোড়েন বৈশ্বিক বাণিজ্যিক ভারসাম্যকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
.
.
গ্যাস সংকট সামাল দিতে পশ্চিমারা মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকেই অনেক ইউরোপীয় দেশ গ্যাস মজুদ শুরু করেছে। ২০২১ এর তুলনায় এলএনজি আমদানি দ্বিগুণ করেছে তারা ( সূত্র: নিক্কেই এশিয়া)। তবে এটি শীঘ্রই কোন সমাধান বয়ে আনবে না। 'ইউরোপের রুটির বাক্স' খ্যাত ইউক্রেনের এই সংকট অচীরেই পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে।
.
.
করোনা মহামারীর পর খনিজ ও কৃষিজ সম্পদে সমৃদ্ধ দুই দেশের এই সংঘাত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ হতে পারে। তাই যুদ্ধ বন্ধের পাশাপাশি খনিজ সম্পদ সরবরাহ সচল রাখতে সবাইকে সচেষ্ট ভূমিকা রাখতে হবে। তেলের বাজারের অস্থিরতা দুর করতে ওপেক+ (OPEC + রাশিয়া) সংস্থাটিকে উজ্জীবিত করতে হবে। কার্যকরী ভূমিকা রাখতে হবে মধ্যপ্রাচ্যকে। সর্বোপরি নিজ ও বৈশ্বিক স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সব দেশের খনিজ সম্পদকে যুদ্ধ আওতামুক্ত রাখতে হবে।
.
.
পৃথিবীর সর্বাধিক গ্যাস উত্তোলনকারী দেশ রাশিয়া। তাদের তৃতীয় বৃহৎ ক্রেতা চীন। সাইবেরিয়ার পাইপলাইনের মাধ্যমে চলে এই রপ্তানি কার্যক্রম। সম্প্রতি অলিম্পিক গেমস উপলক্ষে চীন সফর করেন পুতিন। এসময় দুই দেশের মধ্যে ১১৭.৫ বিলিয়ন ডলারের ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তি সম্পাদিত হয়। এতে গ্যাস রপ্তানি বাৎসরিক ১০ বিলিয়ন ঘনমিটারে উন্নিত করার কথা বলা হয়। উদ্দেশ্যে ২০২৫ সালে ৩৮ বিলিয়ন ঘনমিটার রপ্তানি নিশ্চিতকরণ। একইসাথে ৮০ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ১০ বছরে ১০০ মিলিয়ন টন তেল রপ্তানির চুক্তিও হয়। (আল-জাজিরা)
বাল্টিক সাগরে নর্ড স্ট্রিম-২ এর কর্মযজ্ঞ |
.
সার্বিক বিবেচনায় বলা যায়, নর্ড স্ট্রিম-২ এর আশা রাশিয়া কিছুদিনের জন্যে ভুলে যাবে। পশ্চিমা অবরোধের বিপরীতে ইউরোপে তারা গ্যাস রপ্তানি বন্ধ করে দিলে এক বৈশ্বিক সংকটের সৃষ্টি হবে। এর ভয়াবহতা কিছুটা ইতোমধ্যেই পরিলক্ষিত হচ্ছে। তেল-গ্যাসের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বিশ্ব বাজারে। কয়েকদিনেই বিগত সাত বছরের রেকর্ড ভেঙ্গেছে। এ নিয়ে ইউরোপীয় নেতারা উদ্বিগ্ন। খনিজ সম্পদ নিয়ে এই টানাপোড়েন বৈশ্বিক বাণিজ্যিক ভারসাম্যকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
.
.
গ্যাস সংকট সামাল দিতে পশ্চিমারা মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকেই অনেক ইউরোপীয় দেশ গ্যাস মজুদ শুরু করেছে। ২০২১ এর তুলনায় এলএনজি আমদানি দ্বিগুণ করেছে তারা ( সূত্র: নিক্কেই এশিয়া)। তবে এটি শীঘ্রই কোন সমাধান বয়ে আনবে না। 'ইউরোপের রুটির বাক্স' খ্যাত ইউক্রেনের এই সংকট অচীরেই পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে।
.
.
করোনা মহামারীর পর খনিজ ও কৃষিজ সম্পদে সমৃদ্ধ দুই দেশের এই সংঘাত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ হতে পারে। তাই যুদ্ধ বন্ধের পাশাপাশি খনিজ সম্পদ সরবরাহ সচল রাখতে সবাইকে সচেষ্ট ভূমিকা রাখতে হবে। তেলের বাজারের অস্থিরতা দুর করতে ওপেক+ (OPEC + রাশিয়া) সংস্থাটিকে উজ্জীবিত করতে হবে। কার্যকরী ভূমিকা রাখতে হবে মধ্যপ্রাচ্যকে। সর্বোপরি নিজ ও বৈশ্বিক স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সব দেশের খনিজ সম্পদকে যুদ্ধ আওতামুক্ত রাখতে হবে।
0 comments:
Post a Comment
Please do not enter any spam link in the comment box.