সম্প্রতি বিশ্ববাণিজ্যের ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিন ১৫ নভেম্বর স্বাক্ষরিত হল রিজিয়োনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ(আরসিইপি) চুক্তি। চীনের নেতৃত্বে স্বাক্ষরীত এই চুক্তিতে থাকছে আসিয়ানভুক্ত দশটি দেশ ছাড়াও জাপান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো অর্থনৈতিক শক্তিগুলো।
এশীয়ায় চীনের নেতৃত্বে বাণিজ্য অভ্যুত্থান
আরসিইপি চুক্তির আলোচনা ২০১২ সালে চীনের প্রস্তাবনায় যখন শুরু হয়, তখন থেকেই এর আওতাভুক্ত ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। কিন্তু ট্রাম্প সরকার ২০১৭ সালে এই আলোচনা থেকে বেরিয়ে যায়। এর আগের বছর তথা ২০১৬ সালে এশিয়ার দশটি দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের করা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ(টিপিপি) থেকেও বেরিয়ে যান ট্রাম্প। ট্রাম্পের হঠকারী এই সিদ্ধান্তের সুযোগ নিয়ে এশিয়ায় প্রভাব বাড়াতে চীন আরসিইপি আলোচনা জোরদার করে, যার ফলশ্রুতিতে আজ ইতিহাস সৃষ্টি করে বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে উঠল।
.
.
যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-মেক্সিকো কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের চেয়েও বৃহৎ এই মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলের মোট জিডিপি বিশ্ব জিডিপির উনত্রিশ শতাংশ এবং বিশ্বের মোট উৎপাদিত পণ্যের এক তৃতিয়াংশ এই অঞ্চলেই উৎপাদিত হয়। ফলে এর প্রভাব পরোক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যেও খানিকটা পড়বে। চুক্তির কারণে এর অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো পাশ্চাত্য নির্ভরতা কমিয়ে এনে স্বাক্ষরিত শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের দিকেই মনোযোগ দিবে।
.
যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-মেক্সিকো কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের চেয়েও বৃহৎ এই মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলের মোট জিডিপি বিশ্ব জিডিপির উনত্রিশ শতাংশ এবং বিশ্বের মোট উৎপাদিত পণ্যের এক তৃতিয়াংশ এই অঞ্চলেই উৎপাদিত হয়। ফলে এর প্রভাব পরোক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যেও খানিকটা পড়বে। চুক্তির কারণে এর অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো পাশ্চাত্য নির্ভরতা কমিয়ে এনে স্বাক্ষরিত শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের দিকেই মনোযোগ দিবে।
.
.
আরসিইপি এমন একটি সময়ে স্বাক্ষরিত হল, যখন চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ ব্যাপক আকার ধারণ করে ভৌগলিক আধিপত্য বিস্তার প্রতিযোগিতা পর্যন্ত গড়িয়েছে। তদুপরি মার্কিন নতুন বিচক্ষণ কর্ণধার নিতে যাচ্ছেন উপর্যুপরী চীন বিরোধী নীতি। এমতস্থায় চীনের নেতৃত্বে এশীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে সর্ববৃহৎ মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠা নিঃসন্দেহে চীনকে অনেক শক্ত অবস্থানে নিয়ে এসেছে। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে তাদেরই শক্তিশালী মিত্র দেশগুলোতে চীনের প্রভাব বিস্তার ও সম্পর্ক তৈরির সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হল।
উল্লেখ্য যে, উক্ত চুক্তিতে শুরু থেকে ভারত থাকলেও গত বছর তারা এর থেকে সরে আসে। কিন্তু করোনা পরবর্তী এই সংকটময় মুহূর্তকে কাজে লাগিয়ে চীনের এই চুক্তি স্বাক্ষর ভারতকে ঠেলে দিয়েছে ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখে। এর ফলে ভবিষ্যতে চুক্তির বাইরে থাকা ভারত-বাংলাদেশ উভয়েই তিব্র বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবে।
.
আরসিইপি এমন একটি সময়ে স্বাক্ষরিত হল, যখন চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ ব্যাপক আকার ধারণ করে ভৌগলিক আধিপত্য বিস্তার প্রতিযোগিতা পর্যন্ত গড়িয়েছে। তদুপরি মার্কিন নতুন বিচক্ষণ কর্ণধার নিতে যাচ্ছেন উপর্যুপরী চীন বিরোধী নীতি। এমতস্থায় চীনের নেতৃত্বে এশীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে সর্ববৃহৎ মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠা নিঃসন্দেহে চীনকে অনেক শক্ত অবস্থানে নিয়ে এসেছে। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে তাদেরই শক্তিশালী মিত্র দেশগুলোতে চীনের প্রভাব বিস্তার ও সম্পর্ক তৈরির সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হল।
![]() |
এশীয়ায় চীনের নেতৃত্বে বাণিজ্য অভ্যুত্থান (আরসিইপি) |
উল্লেখ্য যে, উক্ত চুক্তিতে শুরু থেকে ভারত থাকলেও গত বছর তারা এর থেকে সরে আসে। কিন্তু করোনা পরবর্তী এই সংকটময় মুহূর্তকে কাজে লাগিয়ে চীনের এই চুক্তি স্বাক্ষর ভারতকে ঠেলে দিয়েছে ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখে। এর ফলে ভবিষ্যতে চুক্তির বাইরে থাকা ভারত-বাংলাদেশ উভয়েই তিব্র বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবে।
.
.
বিগত বছরগুলোর জরিপে দেখা গেছে, পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিযোগি দেশ হল ভিয়েতনাম, যারা আরসিইপি এবং আসিয়ানভুক্ত। আর সাম্প্রতিক চুক্তিটির ফলে ভবিষ্যতে শুল্কমুক্ত সুবিধার কারণে ব্যাপক বিনিয়োগ এবং ক্রেতার সমাগম ঘটবে ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়ায়, যা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য সুখকর হবেনা।
.
বিগত বছরগুলোর জরিপে দেখা গেছে, পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিযোগি দেশ হল ভিয়েতনাম, যারা আরসিইপি এবং আসিয়ানভুক্ত। আর সাম্প্রতিক চুক্তিটির ফলে ভবিষ্যতে শুল্কমুক্ত সুবিধার কারণে ব্যাপক বিনিয়োগ এবং ক্রেতার সমাগম ঘটবে ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়ায়, যা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য সুখকর হবেনা।
.
.
এই চুক্তির প্রভাব কাটাতে বাংলাদেশ এবং ভারতের নিকট সর্বোত্তম কার্যকারী হাতিয়ার হতে পারে বিমসটেক। দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিমসটেককে অধিকতর কার্যকর করার মাধ্যমে আরসিইপিভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর সাথে সম্পর্ক তৈরি করাই আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ হওয়া উচিত।
.
তবে এই চুক্তির আওতায় না থাকারও কিছু সুবিধা আছে। চুক্তিতে না থাকার ফলে দেশে অবাধে বিদেশি পণ্যের প্রবেশ বন্ধ হয়েছে এবং দেশের ব্যবসায়ীদের অস্তিত্ব রক্ষার হুমকি থেকে রক্ষা করা গেছে।
.
এই চুক্তির প্রভাব কাটাতে বাংলাদেশ এবং ভারতের নিকট সর্বোত্তম কার্যকারী হাতিয়ার হতে পারে বিমসটেক। দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিমসটেককে অধিকতর কার্যকর করার মাধ্যমে আরসিইপিভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর সাথে সম্পর্ক তৈরি করাই আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ হওয়া উচিত।
.
তবে এই চুক্তির আওতায় না থাকারও কিছু সুবিধা আছে। চুক্তিতে না থাকার ফলে দেশে অবাধে বিদেশি পণ্যের প্রবেশ বন্ধ হয়েছে এবং দেশের ব্যবসায়ীদের অস্তিত্ব রক্ষার হুমকি থেকে রক্ষা করা গেছে।
.
.
বিশ্লেষকদের ধারণা, আরসিইপির ফলে সর্বাধিক উপকৃত হবে চীনই। কারণ চীন তেল-গ্যাস ছাড়া তুলনামূলক অনেক কম পরিমাণ দ্রব্যই আমদানি করে, বিপরীতে প্রযুক্তি থেকে শুরু করে কৃষি পণ্যসহ সমরাস্ত্র পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ব্যাপক হারে রপ্তানি করে থাকে। তাছাড়া প্রযুক্তিগত যেসব বিষয়ের ক্ষেত্রে চীন পাশ্চাত্যের উপর নির্ভরশীল ছিল এতদিন তা এখন দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের মাধ্যমে অনেকটাই পূরণ করতে পারবে তারা।
সাধারণতই প্রশ্ন এসে যায়, এর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারে। ধারণা করা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনৈতিক দেশ ভারত ও বাংলাদেশ, বৃহৎ পরিসরে বিমসটেকের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে তারা। এছাড়া দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা বৃদ্ধিসহ হংকং এবং তাইওয়ানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে আঞ্চলিক বিভক্তিকরণ নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হবে।
.
বিশ্লেষকদের ধারণা, আরসিইপির ফলে সর্বাধিক উপকৃত হবে চীনই। কারণ চীন তেল-গ্যাস ছাড়া তুলনামূলক অনেক কম পরিমাণ দ্রব্যই আমদানি করে, বিপরীতে প্রযুক্তি থেকে শুরু করে কৃষি পণ্যসহ সমরাস্ত্র পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ব্যাপক হারে রপ্তানি করে থাকে। তাছাড়া প্রযুক্তিগত যেসব বিষয়ের ক্ষেত্রে চীন পাশ্চাত্যের উপর নির্ভরশীল ছিল এতদিন তা এখন দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের মাধ্যমে অনেকটাই পূরণ করতে পারবে তারা।
সাধারণতই প্রশ্ন এসে যায়, এর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারে। ধারণা করা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনৈতিক দেশ ভারত ও বাংলাদেশ, বৃহৎ পরিসরে বিমসটেকের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে তারা। এছাড়া দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা বৃদ্ধিসহ হংকং এবং তাইওয়ানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে আঞ্চলিক বিভক্তিকরণ নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হবে।
.
.
ঐতিহ্যগতভাবে প্রতিটা চুক্তিরই একটি ভবিষ্যৎ থাকে এবং চুক্তি থেকে যেকোন সময় যেকোন দেশ বিভিন্ন অজুহাতে বের হওয়ার নীতিও বিশ্বে বিদ্যমান। কিন্তু যদি ভৌগলিক দ্বন্দ্বকে দূরে রেখে আরসিইপিভুক্ত দেশগুলো নিজ স্বার্থে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকরণের প্রতি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে তা বিশ্বে অনন্য নজির স্থাপন করবে। এছাড়াও এই বছর চীন মধ্যপ্রাচ্যের উদীয়মান শক্তি ইরানের সাথে দীর্ঘ ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তি স্বাক্ষর করে তেল-গ্যাস আমদানি নিশ্চিত করে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বাজারে পরিণতা করেছে নিজ দেশকে। ফলে চীনকে বাঁধা দেয়ার ক্ষেত্রে এখন যুক্তরাষ্ট্রকে আরো প্রতিকূল পরিবেশের সম্মুখীন হতে হবে বৈকি। আর এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সর্বদা নিরপেক্ষ ভূমিকা রেখে নিজেদের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সচেষ্ট থাকতে হবে।
ঐতিহ্যগতভাবে প্রতিটা চুক্তিরই একটি ভবিষ্যৎ থাকে এবং চুক্তি থেকে যেকোন সময় যেকোন দেশ বিভিন্ন অজুহাতে বের হওয়ার নীতিও বিশ্বে বিদ্যমান। কিন্তু যদি ভৌগলিক দ্বন্দ্বকে দূরে রেখে আরসিইপিভুক্ত দেশগুলো নিজ স্বার্থে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকরণের প্রতি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে তা বিশ্বে অনন্য নজির স্থাপন করবে। এছাড়াও এই বছর চীন মধ্যপ্রাচ্যের উদীয়মান শক্তি ইরানের সাথে দীর্ঘ ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তি স্বাক্ষর করে তেল-গ্যাস আমদানি নিশ্চিত করে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বাজারে পরিণতা করেছে নিজ দেশকে। ফলে চীনকে বাঁধা দেয়ার ক্ষেত্রে এখন যুক্তরাষ্ট্রকে আরো প্রতিকূল পরিবেশের সম্মুখীন হতে হবে বৈকি। আর এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সর্বদা নিরপেক্ষ ভূমিকা রেখে নিজেদের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সচেষ্ট থাকতে হবে।
0 comments:
Post a Comment
Please do not enter any spam link in the comment box.