সিরিয়া পরিস্থিতিতে গত কিছুদিনে তুরষ্ক যা তোলপাড় সৃষ্টি করেছে তা রীতিমতো পুরো মধ্যপ্রাচ্যের হিসেবে গড়মিল সৃষ্টি করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যে তুরষ্ক কী করতে চাচ্ছে
সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ইতোমধ্যেই তার মিত্রবাহিনীকে নিয়ে দেশের 70% জায়গা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।দেশে নিজের অবস্থান পোক্ত করে নেয়ার পর পরিশেষে আসাদ সরকার অভিযান শুরু করেছে বিদ্রোহীদের ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত ইদলিব শহরে।সেই অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে বিদ্রোহীদের সাথে অবস্থানরত তুর্কি সেনারা নিহত হওয়ায় নতুন করে যুদ্ধ শুরু হয়।মূলত এই সেনা হত্যার বিষয়টি নিতান্ত অজুহাত।কারণ ইদলিবে যে অভিযান শুরু করছে সরকার তা সবাইকে জানানো হয়েছিল,তারপরেও বিদ্রোহীদের সাথে তুর্কি কিছু সেনার অবস্থান এবং তা সিরিয়াকে না জানানো;পুরোটাই পরিকল্পিত।
গত কিছুদিনের যুদ্ধে ইতোমধ্যেই তুরষ্ক তাদের পেশিশক্তি এবং যুদ্ধ সরঞ্জামের কার্যকারিতা প্রদর্শন করেছে।সিরিয়ার সাথে রাশিয়া যুক্ত থাকা,পরোক্ষভাবে ইরানের যুক্ত থাকাটা পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে সিরিয়ার পরিস্থিতি।কারণ রাশিয়া ও ইরান দুজনই তুরষ্কের বন্ধু-রাষ্ট্র।কিন্তু সিরিয়ায় নিজেদের বিজয় লগ্নে নতুন কোন বাঁধা দেখতে চায় না রাশিয়া,যার ফলে রাশিয়ার যুদ্ধ জাহাজ পাঠানো ও সেনা মোতায়েন লক্ষ্য করি আমরা।পরিশেষে নতুন করে যুদ্ধ সৃষ্টি করে পাতানো মঞ্চকে উল্টে দিতে নারাজ রাশিয়া যুদ্ধ বিরতিতে সম্মত করে তুরষ্ককে।
এইদিকে তুরষ্ক-সিরিয়ার এই যুদ্ধকে মরণ কামড় দেয়ার মোক্ষম সুযোগ হিসেবে পায় যুক্তরাষ্ট্র।সিরিয়া এবং আফগানিস্তানে পরাজয়ের পর খালি হাতে দেশে সেনা ফিরিয়ে নেয়াটা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লজ্জাজনক,যার প্রভাব সর্বাধিক পরিলক্ষিত হবে নাটের গুরু ট্রাম্পের উপর।ইরান ইস্যুতেও ট্রাম্প সম্পূর্ণ ব্যর্থ! ইরানের পারমাণবিক বোমা বানানো প্রতিরোধ তো দূরের কথা,সবধরনের অবরোধের ফলস্বরুপ কিছুদিন পূর্বে বিশ্ব আণবিক সংস্থা জানিয়েছে যে ইরান ইতোমধ্যেই ইসরায়েলে হামলায় সক্ষম পারমাণবিক বোমা তৈরি করেছে,এবং যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত করতে সক্ষম বোমা তৈরি করতে আর কয়েক মাস লাগবে তাদের! এছাড়াও ইরান সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে নতুন ধরনের ব্যালস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে,যা যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্রের স্থান দখল করবে! আর কী চান ট্রাম্প???
![]() |
মধ্যপ্রাচ্যে তুরষ্ক কী করতে চাচ্ছে |
সবশেষে এটা বোজা যায় যে,নিজের সিংহাসনের মজবুত ভিত গড়তে ইদলিবে বহিরাগত শক্তি দেখতে চায়না আসাদ সরকার,অপরদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের কিছু অংশ সময়মত নিয়ন্ত্রণে নিতে বধ্য পরিকর তুরষ্ক।তবে রাশিয়া,তুরষ্ক,সিরিয়া কেউ এক চুল পরিমাণ ছাড় না দেয়ার যে মানসিকতা, তা বজায় থাকলে মধ্যপ্রাচ্য অদূর ভবিষ্যতে মৃত্যুপুরিতে পরিণত হবে।
0 comments:
Post a Comment
Please do not enter any spam link in the comment box.