মধ্যপ্রাচ্য হল এশিয়া ও আফ্রিকার মধ্যবর্তী একটি অঞ্চল। মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস আদিকাল থেকেই প্রসিদ্ধ ছিল এবং এর ইতিহাস থেকেই এটি সারা বিশ্বের এক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে
মধ্যপ্রাচ্যের মৌসুমী হাওয়া
সম্প্রতি ইরানের একজন সামরিক জেনারেলের হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে চলছে পুরো বিশ্বের অর্থনীতির চাঞ্চল্যতা।বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বেড়েছে ব্যারেল প্রতি 3-400 টাকা,শুরু হয়েছে শক্তিধর দেশগুলোর শেয়ারবাজারে দরপতন।আবার ব্যাবসায়িক অনেক খাত রয়েছে অপেক্ষমান,ইরান কেমন পদক্ষেপ নিচ্ছে তার উপর ভিত্তি করে পরিবর্তন হবে সেসব খাতের।
পুরো বিশ্ব তাকিয়ে আছে ইরানের দিকে,ব্যাপারটা কিভাবে সামাল দেয় তারা,আসুন আমরাও দেখে নেই কী হতে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে•••
প্রথমেই বলে রাখি,বিশ্বের অন্যতম তুখোড় সমরবীদ,মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের একচ্ছত্র আধিপত্যের প্রসারকারী এই জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা বলা যায় যুক্তরাষ্ট্রের মোক্ষম কামড়,শুধু সময়টা ব্যতিক্রম হয়ে গেছে।দ্রুত প্রসারলাভকারী শত্রু পক্ষের যেকোন সংগঠনকে দমাতে তার প্রধানকে সরিয়ে দেয়া এটা সম্পূর্ণ ইসরায়েলি কৌশল।বিগত 50 বছরে ইসরায়েল এই কায়দা অবলম্বন করে হামাস,হিজবুল্লাহ,ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিসহ অনেক কার্যক্রমকে স্তিমিত করেছে,কখনো সংগঠনকে বিলুপ্ত করতেও সক্ষম হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রও সেই কৌশল অবলম্বন করে লাভবান হতে চেয়েছিল এইবার।
বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী হঠাৎ অতর্কিত এই ঘটনা ঘটানোর পেছনে দুটি কারণ রয়েছে।প্রধান কারণ হলো আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে মোদির কায়দায় কট্টরপন্থীদের সমর্থনে ট্রাম্পের নিজের অবস্থান শক্ত করে অভিসংশনের দুর্নামের ক্ষতিটা পুষিয়ে নেয়া,অপরটি হলো মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের টুঁটি চেপে ধরা।তবে প্রধান কারণ নির্বাচনই,যা বুঝতে পেরে মার্কিনিরা অনেকেই এই হামলার নিন্দা করেছে।তবে যে যাই বলুক,এমন একজন ব্যাক্তিকে সরিয়ে দেয়াটা নিঃসন্দেহে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ অর্জন।
সকলের আশঙ্কা ছিল দুইটি,হয়তো ইরান ঐতিহ্যগতভাবে উগ্রতার কারণে যুদ্ধে জড়াবে,নাহয় সময়ের অপেক্ষায় থেকে প্রক্সি ওয়ার চালাবে এবং পারমাণবিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করবে।কারণ ইরানের মিলিটারি পাওয়ারের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র যথেষ্ট শক্তিশালী এবং তার চারপাশে ঘাঁটি তৈরি করে রেখেছে বিভিন্ন দেশে।
কিন্তু দেখা গেল ইরানে যেনো নতুন সোলেমানির বুদ্ধি সঞ্চার হলো!
কিন্তু দেখা গেল ইরানে যেনো নতুন সোলেমানির বুদ্ধি সঞ্চার হলো!
কয়েকদিনের মাথায় তারা পাঁচ দফায় মার্কিন ঘাঁটিতে রকেট হামলা করলো যাতে কেউ মারা না যায়,এতে যুক্তরাষ্ট্রের ভয় দীর্ঘস্থায়ী হলো,এই ভয়ের রেশ ধরে রেখেই এগুতে লাগল ইরান,নিজস্ব ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে ইরাকের সংসদে পাশ করালো মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের আইন! এটা বৃহৎ একটি পদক্ষেপ যদিও এখনো তা বোঝা যাচ্ছেনা।কতটা ক্ষমতা থাকলে কয়েকদিনের মাথায় একটা দেশের পার্লামেন্টে আইন পাশ করাতে পারে ভেবে দেখুন।
সেই 'ভয়' জিইয়ে রাখতে পুনরায় করলো পনের দফায় রকেট হামলা,যাতে প্রাণ হারালো 80,আহত হলো 200 মার্কিন সেনা।কিন্তু ট্রাম্প বলছে তাদের কাছে হতাহতের ঘটনা জানা নেই,তবে হামলা হয়েছে।
সেই 'ভয়' জিইয়ে রাখতে পুনরায় করলো পনের দফায় রকেট হামলা,যাতে প্রাণ হারালো 80,আহত হলো 200 মার্কিন সেনা।কিন্তু ট্রাম্প বলছে তাদের কাছে হতাহতের ঘটনা জানা নেই,তবে হামলা হয়েছে।
এর থেকে বোঝা যায় যে ট্রাম্প এখন কোণঠাসা,ধামাচাপা দিতে চাইছে ক্ষতির পরিমাণটা,বরং বড় কিছু না করে যদি এই ঘটনার রেশ কাটানো যায়,তাহলে এখনো তার নির্বাচনি প্রচারনায় হাওয়া লাগাতে পারে এই ইস্যু।
সবচেয়ে বড় চাতুরী হলো এই যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব এবং বিশ্বের ভয়ের মাঝেই ইরান আনুষ্ঠিনিকভাবে পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেল ঘোষণা দিয়ে; ইউরোপ,আমেরিকা কেউ টুঁ শব্দটি করলো না! বরং সবাই চুপ।অথচ এটা স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে হলে অনেক তোলপাড় সৃষ্টি হতো,নতুন অবরোধ দেয়া হতো ইইউ কর্তৃক।
আর গবেষেকরা কী বলছেন জানেন এই সম্পর্কে? ইরান ছয় মাস উচ্চ মাত্রায় ইউরেনিয়াম মজুদ করলে পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে পারবে,আর তা তারা করতে পারবে কারণ এখন আর কোন চুক্তিতে নেই তারা।
আর গবেষেকরা কী বলছেন জানেন এই সম্পর্কে? ইরান ছয় মাস উচ্চ মাত্রায় ইউরেনিয়াম মজুদ করলে পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে পারবে,আর তা তারা করতে পারবে কারণ এখন আর কোন চুক্তিতে নেই তারা।
তবে ইরান পুরো মধ্যপ্রাচ্য হতে মার্কিনিদের হঠানোর যে ঘোষণা দিয়েছে এবং তদানুযায়ী যেভাবে কাজ করছে,তা অদূর ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের জন্যে হবে বৃহৎ ক্ষতি।
পরিশেষে বলা যায়, প্রথমে জেনারেল সোলাইমানি হত্যাটি ট্রাম্পের জন্য ট্রাম্পকার্ড হয়ে উদ্ভব হলেও এখন কার্ডের রং পাল্টে যেতে শুরু করেছে,যা খুব একটা ভাল রং হবেনা মার্কিনিদের কাছে•••
0 comments:
Post a Comment
Please do not enter any spam link in the comment box.